আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের যে বাড়িতে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছেন, স্বাধিকারের সংগ্রামে জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, সে বাড়িটি আজ তাঁর নানা স্মৃতিচিহ্ন বহন করছে। বর্তমানে এটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আজ এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্মৃতি জাদুঘরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এর জন্য উপস্থিত হয়েছেন জাতীয় শ্রমিক লীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুলতান আহমেদ, উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক এটিএম ফজলুল হক ,উপস্থিত বক্তব্য রেখেছেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সুলতান আহমেদ, ও ঢাকা জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান শাহাবুদ্দিন আহমেদ।
৭ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তাল জনসমুদ্রে এক ঐতিহাসিক ভাষণেরমাধ্যমে স্বাধীনতার চূড়ান্ত রণ-প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। যার ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানিদের হাত থেকেশাসনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বাঙালি জাতি, প্রস্তুত হতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য। এরপর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা যখন অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলে পড়ে, সঙ্গে সঙ্গেই (২৬ মার্চ প্রথম প্রহর) বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করেন। মূলত, ৭ মার্চের সেই ভাষণের মাধ্যমেই দেশবাসীর কাছে স্বাধীনতার ঘোষণার অন্তর্নিহিত বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তাই সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রস্তুতি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ নামার জন্য প্রতীক্ষায় ছিল দেশপ্রেমি জনগণ। ফলে ২৬ মার্চ মাত্র কয়েকলাইনে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরপরই যুদ্ধে নেমে পড়ে আপামর বাঙালি।
১৯৬১ সালের ১ লা অক্টোবর থেকে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের এই বাড়িতে বসবাস করতে শুরু
করেন। ১৯৬২ সালের আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফার আন্দোলন,
১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচন, ১৯৭১ এর শুরুতে অসহযোগ আন্দোলন, এই সবগুলো
ক্ষেত্রেই শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা প্রনয়ন, দলের নেতা-কর্মীদের সাথে
মতবিনিময়, সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা শোনা এই সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু
ছিল ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি। দেশী-বিদেশী সাংবাদিকরা এই বাড়িতে ভিড় করেছেন ৭১
এর উত্তাল দিনগুলোতে।
“এবারের
সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” – ৭ই মার্চের
বিখ্যাত সেই ভাষণের রুপরেখাটি বঙ্গবন্ধু তৈরি করেছিলেন এখানকার কনফারেন্স
টেবিলে বসে। স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি
তখনও তিনি এই বাড়িটি থেকে রাষ্ট্রীয় কাজকর্ম পরিচালনা করতে থাকেন। এই বাড়ি
থেকে অসংখ্যবার পাকিস্তানী সৈন্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। সর্বশেষে
গ্রেপ্তার করেছিল ৭১ এর ২৫ শে মার্চ রাতে। বলা হয়ে থাকে তিনি ধরা
দিয়েছিলেন। কারণ তিনি জানতেন তাঁকে না পেলে এই সৈন্যরা নিরস্ত্র জনগণের উপর
নারকীয় তান্ডব চালাবে।
আর এই বাড়িতেই তাঁকে স্বপরিবারে প্রাণ দিতে হয়েছিল ১৯৭৫ এর ১৫ ই আগষ্ট।